প্রিয় গ্রাহক, আপনার অনুভূতির কথা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। আপনি নিজের ব্যাপারে সচেতন হয়েছেন এবং উদ্দোগী হয়েছেন এটি খুবই প্রশংসনীয়।বুঝতে পারছি বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আপনি মানসিক চাপ অনুভব করছেন। গ্রাহক, আমরা কেমন অনুভব করব এবং কিভাবে আচরণ করব তা নির্ভর করে আমাদের চিন্তার ধরণের উপর। যদিও চিন্তা আমাদের সাহায্য করে বিভিন্ন বিষয়ে ঠিকভাবে বুঝতে ও পরিকল্পনা করতে , অতিরিক্ত চিন্তা আমাদের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত চিন্তার কারণে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিক কাজকর্মে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সেক্ষেত্রে কি ধরণের চিন্তা করছি তা সনাক্ত করা খুবই প্রয়োজন। এবং যে চিন্তাগুলো করছি তার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন। তাই চিন্তাগুলো সনাক্ত করে বিভিন্ন প্রশ্নের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ করে সত্যতা যাচাই করতে পারেন। যেমনঃ এই চিন্তাগুলো আমাকে কিভাবে সাহায্য করছে, এই চিন্তা করার সুবিধা অসুবিধা কি, কি প্রমাণ আছে আমি যেভাবে ভাবছি সেটিই সত্যি হবে, আমি যা ভাবছি তার বিকল্প কি হতে পারে? ইত্যাদি প্রশ্নের মাধ্যমে সত্যতা যাচাই করতে পারেন। যদি এমন দেখা যায় যে একই ধরণের চিন্তা বারবার করা হচ্ছে সেক্ষেত্রে নিজেকে অন্য কোন কাজের মধ্যে রেখে ডিস্ট্রাকশন করতে পারেন। মাইন্ডফুলনেস প্র্যাক্টিস করতে পারেন। যেমনঃ সে মুহূর্তে যে কাজটি করছেন তা সচেতনভাবে পর্যবেক্ষণ করা। যে খাবারটি খাচ্ছেন তার স্বাদ, ঘ্রাণের দিকে মনোযোগ দিয়ে খাওয়া, হাত দিয়ে কাজ করার সময় স্পর্শ বোঝার চেষ্টা করা। সামনের জিনিসপত্রের কালার পর্যবেক্ষণ করা ইত্যাদি। এছাড়া আপনি যে নিঃশ্বাস নিচ্ছেন এবং ছাড়ছেন সেটিও খেয়াল করতে পারেন। নিঃশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন ( যখন আমরা দুশ্চিন্তা করি আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের স্বাভাবিক গতি ব্যহত হয়। ফলে শরীর ও মনে অস্থিরতা অনুভব করি। যেভাবে করবেন - বুক ভরে শ্বাস নিন, কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখার চেষ্টা করুন এরপর ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন।এভাবে কয়েক মিনিট অনুশীলন করুন । ) যখন আমরা একা থাকি তখন আমাদের নেতিবাচক চিন্তা গুলো বেশি আসে। তাই প্রতিদিন বিশ্বস্ত বন্ধুবান্ধব, পরিচিত মানুষ, পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলুন। আপনি লিখেছেন বিয়ে নিয়ে একটি চাপের মধ্যে রয়েছেন। গ্রাহক, আপনি একটি কাগজে একপাশে পছন্দের মানুষকে বিয়ে করলে আপনার জীবনে কি কি সুবিধা অসুবিধা হতে পারে এবং অন্যপাশে পরিবারের পছন্দে বিয়ে করলে আপনার জীবনে কি কি সুবিধা অসুবিধা হতে পারে তার একটি লিস্ট তৈরি করতে পারেন। এরপর লিস্ট থেকে কোন বিষয়গুলো আপনার জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য এবং কোন বিষয়গুলো একদমই অগ্রহণযোগ্য তা সনাক্ত করতে পারেন। এই বিষয়গুলো বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। পরিবারের মানুষকে তাদের আবেগ ও মতামতকে হেয় না করে ইতিবাচকভাবে আপনার আবেগ ও মতামত বুঝাতে পারেন। আপনি কি কারণে পছন্দের মানুষটির সাথেই থাকতে চান এবং এ নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কি তা বুঝিয়ে বলতে পারেন। তার সাথে থাকার কারণে কি অসুবিধা হতে পারে এবং আপনি সেই অসুবিধা কিভাবে কাটিয়ে উঠতে চান তা জানাতে পারেন। দৈনন্দিন জীবনের একটি সাধারণ রুটিন রাখার চেষ্টা করুন। যদিও আপনার অনুভূতির কারণে নিয়ন্ত্রণহীন মনে হতে পারে তবুও চেষ্টা করুন যতটা সম্ভব ধাপে ধাপে কাজ ভাগ করে নিয়ে রুটিন স্বাভাবিক রাখার। প্রতিদিন রোদে বা প্রাকৃতিক পরিবেশে অন্তত ৩০ মিনিট সময় ধরে থাকার চেষ্টা করুন। এড়িয়ে চলা সাময়িক স্বস্তি দিলেও দীর্ঘমেয়াদে তা সমস্যাকে মেইনটেইন করে।যেসব কাজ এড়িয়ে চলছেন তা করার চেষ্টা করুন। এছাড়া ভাল থাকার জন্য যা যা করতে পারেন - সময়মতো পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত পানি পান করা, রাতে পর্যাপ্ত ঘুমানো, প্রতিদিন নিজের ভালো লাগার ছোট ছোট কাজ করার অভ্যাস করা, আশা করি আপনাকে কিছুটা সহযোগীতা করতে পেরেছি। নতুন কোন প্রশ্ন থাকলে করতে পারেন। মায়া আছে আপনার পাশে।
প্রশ্ন করুন আপনিও